চারটি কবিতা
(১)
অফিস
থেকে ফিরে এসে, কবি তার জলভরা খাতা নিয়ে ফেসবুকের সামনে যায় । ভাল মন্দের বাইরে গিয়ে
স্ট্যাটাস শেয়ার করে সে। এরপরে ফেসবুক বন্ধ করে পাড়ার দোকানে চা আর সিঙ্গারা খেতে যায়
। বিড়ি খেতে খেতে দেখে তার চশমার ভেতর দিয়ে
আশে পাশের লোক ক্রমশ ছোট হয়ে যাচ্ছে। আবার সে ফিরে আসে ফেসবুকের ধারে এবং দেখে
কত লোক তার পোস্টে কমেন্ট ও লাইক করেছে। কত প্রশ্ন করেছে? সে দেখে আর ক্রমশ দেখতে থাকে।
কিন্তু কোনও উত্তর দেয়না। অজস্র প্রশ্ন, অজস্র কমেন্ট, অজস্র ইমোজী, তবুও সে উত্তর
দেয় না।
(২)
গাছেরা
বুড়ো হয়ে গেলে শুধু বুড়োদের হাত থেকে জল নেয়। এভাবে তাদের মধ্যে অপূর্ব হৃদ্যতা গড়ে
ওঠে। বুড়োরা তাদের ছেলেবেলা আর গাছেরা তাদের শিকড়ের গল্প করে। আর বলে কিভাবে তারা বাংলার
এতবড় দুর্ভিক্ষ কাটিয়ে টিকে গেছে। বেলা পড়ে
যায়, সন্ধ্যে হলে চপ, মুড়ির দোকান বসে জ্যোৎস্নার আগে। তারা এসব ছুঁয়েও দেখে না। তখন
তারা শিকড় তত্বের গভীরে ঢুকে তাদের উৎস খুঁজতে ব্যাস্ত থাকে। অন্ধকার হলে তারা ক্রমশ
এক হয়ে যায়, অন্ধকারে কেউ তাদের আলাদা করতে পারে না।
(৩)
রোজ
একটা করে চড় নিয়ে সে ফিরে আসে। রাতের বেলা ভাত হয়ে গেলে, চড় খুলে নুন, লঙ্কা দিয়ে ভাতের
সাথে সে মেখে নেয়। প্রতিটি গরসে এক একটা দ্বীপের
মত সাম্রাজ্য লেখা থাকে । এরপর সে বই খুলে পড়ে নেয় "গোলাপি মুক্ত রহস্য"
। সে নিজের রহস্যকে নতুন করে আবিষ্কার করে- চড় নিয়ে বাড়ি ফিরে আসার সময়টুকু।
(৪)
টিভির দুঃখ হলে, সে তাকে বাথরুমে নিয়ে যায়। তাকে টিপে
প্রচুর জল বের করে। তারপর সে জল, বাগানে লাগানো গাছ গুলিকে দেয়। এমনি করে গাছগুলি বাড়তে থাকে, ফুল ও ফল হয়।
এরপর অবশ্য গাছেরা বড় হয়ে গেলে তারা আর জল নেয় না। একদিন সে দেখে তারা ধর্মঘটে বসেছে
টিভির দুঃখ দূর করার জন্য।
No comments:
Post a Comment