Sunday, February 17, 2019

প্রগতি বৈরাগী-র গুচ্ছকবিতা







নিজস্ব ঘিরে


কেন শুধু কবিতারা...



জলরঙে ফুটে উঠছে ঝাপসা ঝাপসা ঘরদোর

গেটের খয়েরঘেষা মরচে আর সবুজছোপ                                                            কেমন মিলেমিশে যাচ্ছে গ্রিলের আঁকিবুকিতে
খড়খড়িরা একটু গন্ধ মাখতে চায় আজকাল
তার্পিন ঢালা নতুন রঙের গন্ধ
এইমাত্র একটা ট্রেন নামিয়ে দিয়ে গেল কিছু পূর্বোক্ত ঝমঝম
নীলসাদা পর্দা ভরাটবুক উদলা করে তাকে ঢুকিয়ে নিল ভিতরে
বিড়ালছানাটা সকালে চৌকাঠ ভিজিয়েছে
হিসির ঝাঁঝালোঘ্রাণ ঢেকে দিচ্ছে                                                                        মসুরডাল সম্বরার রাগঝাল আর ব্যঞ্জণের সুবাস



সংসারবর্ণ অক্ষরের মাঝে বসে লিখে চলেছেন ঈশ্বর

আর আমি তাঁকে গর্ভে নিয়ে কবিতা পোহাচ্ছি





মাথুর অধিক


বান্ধনের মায়াখান ক্যামনে শুকায় গ্যাসে

লগে লগে ক্ষইয়া গ্যাসে জাম রঙ্গা দুফর বিহান
তুমারে দিবার পারি, একখান ঘর নাই...
ছাওয়ালের হাসি আর দুধভাসা ঠোঁটের ঘিরাণ


সুতাশঙ্খে মিল্যামিশ্যা জড়াজড়ি কাটছে প্রহর

বিচ্ছেদ ভাইব্যা বড়... পরাণ পুড়ায়
পরাণ কইতে, পাখি, তুমি এক ঠাঁই
ফাঁকা পিঞ্জর তাই এক্ক্যারে ভাইঙ্গা চুইড়া যায়


দেহ দিছি, প্রাণ দিছি, রইয়া গ্যাসে সংসারখান

তুমার বিধায় লাগে আগুনের খাপরা লাহান
চিক্খইর পাইড়া তাই ছুটসি তুমার পাছ পাছ
এ জনমে, তুমি সাঁই, যত দূর লইয়া যাও,...যাই


তুমার পায়ের তলে সইজনার ফুল

তুমার নাওয়ের লাইগ্যা জুঁইখণ্ডী ঘাট
মাথুর সওয়ার জোর হাতাইয়া পাইনা কুথাও
সাথে কইরা লয়া যাও তুমার নবীন রাজপাট


সিথায় নতুন সই রূপশালী ধানের মতন

ঝলমল ঘরখান থইথই সুখে ভাইস্যা যায়
তুমার বুকের কাছে এলাইয়া আছে তার মুখ
তুমারেই কইয়া যাই, কষ্ট পাইছি ভীষণ


কষ্ট পাইক্যা উইঠা কালি হয় বিষের লাহান

শরীলের পাত চিইর্যা ফেনা ফেনা বিষ উছলায়
ঢাইলা দিয়াম ভাবি, বুকখান হয় ছারখার
মাইয়ার কোলের থিক্যা তোমার পুতলী চোখ চায়


শরীল গুটাইয়া নিই, বিষথলি জরজর ছাই

ফিরত যাবার লাগে, রাইখ্যা যাই এক কণা দাগ
পুলার মায়েরে ছুঁই,...আন্ধারের মাঝখানে, 
মিশ্যা হই এয়োতি সুহাগ



ভৈরব



আমি সন্ধ্যা লিখি
সন্ধ্যা, ফ‍্যাকাশে রাত, মোনাজাতে গাঢ় হলে
ভেজা গায়ে উঠে আসে নিহত কুহক
আজো তার নাভিপদ্ম সুরভিত করে আছে তোমার জন্মঘ্রাণ



সে ঘোর অঘোর হাতে

ভ্রূমধ‍্যে এঁকে দেয় শুদ্ধতম অশান্তির ছাপ

ঠোঁটের পেয়ালা থেকে জিহ্বা,

জিহ্বা ছুঁয়ে দীঘল বিদ্যুৎ

স্তবকে ফুটে ওঠে আদিশস‍্য, শব্দস্মারক



নিবেদন থেকে তার, চুমুকে চুমুকে,

চিনে নিচ্ছ প্রার্থনা, উতল বহতা



তুমি তাকে স্থল দেবে?
গৃহগ্রন্থি, মাতৃগর্ভ, উল্লাস ও শোক!




ভাষা

আসলে ভেঙেছে সবই-
ভ্রম
   প্রেম
       ভ্রমের বিকার


উড়ে যাচ্ছে সম্পর্ক, পাখিটি


সূর্যাস্ত।
তামা তুলসী আলাদা আলাদা


বর্ণমালা নদীর কঠোর


ঝুপ শব্দে তুলে আনছে

কবিতা লেখার লোক, অন্য কোনো ঘাটে বাঁধা ভোর

No comments:

Post a Comment

একঝলকে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে

"একটা কথা আমি বলি। আমরা অনেকগুলো জিনিস খবরের কাগজে দেখি। সারফেসে দেখি, তার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে যাই। আমাদের আর কিন্তু প্রভাব...