বাংলা কবিতার ব্যক্তিত্বের নাম আল মাহমুদ
সোনার দিনার নেই, দেনমোহর চেয়না হরিণী
যদি নাও দিতে পারি কাবিনবিহীন হাত দুটি,
আত্মবিক্রয়ের স্বর্ন কোনোকালে সঞ্চয় করিনি
আহত বিক্ষত করে চারদিকে চতুর ভ্রুকুটি;
ভালবাসা দাও যদি আমি দেব আমার চুম্বন,
ছলনা জানিনা বলে আর কোনো ব্যাবসা শিখিনি
দেহ দিলে দেহ পাবে দেহের অধিক মূলধন
আমারতো নেই শখি, যেই পণ্যে অলংকার কিনি।
বিবসন হও যদি দেখতে পাবে আমাকে সরল
পৌরষ আবৃত করে জলপাই পাতাও থাকবেনা,
তুমি যদি খাও তবে আমাকেও দিও সেই ফল
জ্ঞানে ও অজ্ঞানে দোঁহে পরষ্পর হব চিরচেনা
পরাজিত নই নারী, পরাজিত হয়না কবিরা;
দারুণ আহত বটে আর্ত আজ শিরা- উপশিরা।
এ -তীর্থে আসবে যদি ধীরে অতি পা ফেল সুন্দরী,
মুকুন্দরামের রক্ত মিশে আছে এ মাটির গায়।
ছিন্ন তালপত্র ধরে এসো সেই গ্রন্থ পাঠ করি
কত অশ্রু লেগে আছে এই জীর্ণ তালের পাতায়।
কবির কামনা হয়ে আসবেকি হে বন্য বালিকা
অভাবের অজগর জেনো তবে আমার টোটেম,
সতেজ খুনের মত এঁকে দেব হিঙুলের টিকা।
যদি নাও দিতে পারি কাবিনবিহীন হাত দুটি,
আত্মবিক্রয়ের স্বর্ন কোনোকালে সঞ্চয় করিনি
আহত বিক্ষত করে চারদিকে চতুর ভ্রুকুটি;
ভালবাসা দাও যদি আমি দেব আমার চুম্বন,
ছলনা জানিনা বলে আর কোনো ব্যাবসা শিখিনি
দেহ দিলে দেহ পাবে দেহের অধিক মূলধন
আমারতো নেই শখি, যেই পণ্যে অলংকার কিনি।
বিবসন হও যদি দেখতে পাবে আমাকে সরল
পৌরষ আবৃত করে জলপাই পাতাও থাকবেনা,
তুমি যদি খাও তবে আমাকেও দিও সেই ফল
জ্ঞানে ও অজ্ঞানে দোঁহে পরষ্পর হব চিরচেনা
পরাজিত নই নারী, পরাজিত হয়না কবিরা;
দারুণ আহত বটে আর্ত আজ শিরা- উপশিরা।
এ -তীর্থে আসবে যদি ধীরে অতি পা ফেল সুন্দরী,
মুকুন্দরামের রক্ত মিশে আছে এ মাটির গায়।
ছিন্ন তালপত্র ধরে এসো সেই গ্রন্থ পাঠ করি
কত অশ্রু লেগে আছে এই জীর্ণ তালের পাতায়।
কবির কামনা হয়ে আসবেকি হে বন্য বালিকা
অভাবের অজগর জেনো তবে আমার টোটেম,
সতেজ খুনের মত এঁকে দেব হিঙুলের টিকা।
আঞ্চলিক ইতিহাস, আঞ্চলিকতার রঙ, স্পর্শ গন্ধ জীবনানন্দের
চেয়েও আরও নিখুঁতভাবে তাঁর কবিতায় ফুটে উঠেছে বলে আমি বিশ্বাস করি। কিন্তু ‘লোকাল’
হলেও তাঁর কবিতায় কি এই ‘গ্লোবাল’ প্রেক্ষিত ছিল না? তিনি ব্যবহার করেছেন আঞ্চলিক শব্দ,
আঞ্চলিক প্রতীকের সংসারকে। কথা বলেছেন সেই সংসারের, ইতিহাসের। কিন্তু তার মাধ্যমেই
আন্তর্জাতিকতাকেও স্পর্শ করে আছেন। এই স্পর্শ করে থাকা কিন্তু নির্মিতি, সচেতন নির্মিতি।
কিন্তু তার গঠন এতটাই স্বতঃস্ফূর্ত, যে বোঝা যায় কবির রাজনৈতিক অভিপ্রায়ও। যেমন একটি
সনেটে তিনি লিখছেন-
শ্রমিক সাম্যের মন্ত্রে কিরাতেরা উঠিয়েছে হাত
হিয়েন সাঙের দেশে শান্তি নামে দেখো প্রিয়তমা,
এশিয়ায় যারা আনে কর্মজীবী সাম্যের দাওয়াত
তাদের পোশাকে এসো এঁটে দিই বীরের তকোমা।
আমাদের ধর্ম হোক ফসলের সুষম বণ্টন,
পরম শান্তির মন্ত্রে গেয়ে ওঠো শ্রেণির উচ্ছেদ,
এমন প্রেমের বাক্য সাহসিনী করো উচ্চারণ,
যেন না ঢুকতে পারে লোকধর্মে আর ভেদাভেদ
বাংলা কবিতায় শুধু না, বিশ্ব কবিতার মানচিত্রে আল মাহমুদ এক চিরকালীন সাধনার নাম। নশ্বরতার ক্ষণস্থায়ীত্ব যাকে স্পর্শ করতে পারে না।
No comments:
Post a Comment