Sunday, February 17, 2019

গল্প- অমিতাভ দাস






একজন নিমচাঁদবাবুর গল্প 

 লোকটিকে আমার ভালো লেগে গেল । কথাবার্তায় বেশ সপ্রতিভ । নাম নিমচাঁদ বসাক । সদ্য অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মচারী । -- আমার কাছে আগমনের হেতু ? -- শুনেছি আপনি লেখেন- টেখেন । আমার একটু শখটখ ছিল । ছাত্র জীবনে লিখতাম । আবার শুরু করব ভাবছি । বেশ উৎসাহী হয়ে বললাম , বাঃ খুব ভালো । আপনার সাহায্য চাই । বললে নিমচাঁদবাবু । -- কী সাহায্য করতে পারি বলুন । নিশ্চয় সাহায্য করব । আপনার লেখা , আপনার পরামর্শ চাই । আমি চাই আপনি পাশে পাশে থাকুন । বললাম , থাকব । চা চলে এলো । বিস্কুট চিবুতে চিবুতে নিমচাঁদবাবু বললে , ভাবছি একটা পত্রিকা করব । এই দু- তিন ফর্মার । -- খুব ভালো । করুন না । চায়ে চুমুক দিয়ে নিমচাঁদবাবু বললে , এ লাইনে নতুন । সবাইকে চিনি না । কার কার লেখা নেব । পত্রিকায় কী কী থাকলে ভালো হয় ? বললাম , কবিতা গল্প প্রবন্ধ... --আর ? -- আরো কিছু রাখতে চাইলে পুস্তক সমালোচনা এবং সাক্ষাৎকার রাখতে পারেন । বেশ গদগদ হয়ে উঠলেন নিমচাঁদবাবু । দারুণ প্রস্তাব । আচ্ছা কার কার সাক্ষাৎকার নেওয়া যায় বলুন তো ! আমি কয়েকটা নাম বললাম । যেমন ধরুন বৃন্দাবন চন্দ্র চন্দ , রমণীরমন পাল , লোচনসুন্দর ঘোষ , শরৎচন্দ্র ডোম.. কিছুক্ষণ ভেবে নিমচাঁদবাবু বললে , তাহলে লোচনসুন্দর ঘোষের ইন্টারভ্যু নেওয়া যেতে পারে । -- কারণ ? জিজ্ঞেস করলাম আমি । নিমচাঁদবাবু বললেল , শুনুন যাঁদের নাম বললেন তাঁদের নাম শুনেছি । তবে লোচনবাবু স্কুলটিচার । টাকা- পয়সা অনেক আছে । ছাত্র পড়ায় । লেখালিখিটাও ভালোই করেন । ভেবেছি ওঁর থেকে ডোনেশান বাবদ টাকা নেব আর ইন্ট্যারভ্যুটাও ছেপে দেব । মাছের তেলে মাছ ভাজা আর কী... বললাম , সে কী ! অন্যরা কী দোষ করল ? নিমচাঁদবাবু বললে , তাঁদের তেমন টাকাও নেই । আর চাইলেও দেবে না । আমি আসলে লেখকদের টাকাতেই পত্রিকাটা করতে চাই , বলে দাঁত বার করলেন । আমি উঠে দাঁড়ালাম । হাত জো করে দরজা দেখিয়ে বললাম , আপনি এবার আসুন । 

আমার অন্য কাজ আছে ।

No comments:

Post a Comment

একঝলকে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে

"একটা কথা আমি বলি। আমরা অনেকগুলো জিনিস খবরের কাগজে দেখি। সারফেসে দেখি, তার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে যাই। আমাদের আর কিন্তু প্রভাব...