একজন নিমচাঁদবাবুর গল্প
লোকটিকে আমার ভালো
লেগে গেল । কথাবার্তায় বেশ সপ্রতিভ । নাম নিমচাঁদ বসাক । সদ্য অবসরপ্রাপ্ত সরকারী
কর্মচারী । -- আমার কাছে আগমনের হেতু ? -- শুনেছি
আপনি লেখেন- টেখেন । আমার একটু শখটখ ছিল । ছাত্র জীবনে লিখতাম । আবার শুরু করব
ভাবছি । বেশ উৎসাহী হয়ে বললাম , বাঃ
খুব ভালো । আপনার সাহায্য চাই । বললে নিমচাঁদবাবু । -- কী সাহায্য করতে পারি বলুন
। নিশ্চয় সাহায্য করব । আপনার লেখা , আপনার
পরামর্শ চাই । আমি চাই আপনি পাশে পাশে থাকুন । বললাম ,
থাকব
। চা চলে এলো । বিস্কুট চিবুতে চিবুতে নিমচাঁদবাবু বললে ,
ভাবছি
একটা পত্রিকা করব । এই দু- তিন ফর্মার । -- খুব ভালো । করুন না । চায়ে চুমুক দিয়ে
নিমচাঁদবাবু বললে , এ
লাইনে নতুন । সবাইকে চিনি না । কার কার লেখা নেব । পত্রিকায় কী কী থাকলে ভালো হয় ?
বললাম
, কবিতা গল্প
প্রবন্ধ... --আর ? -- আরো
কিছু রাখতে চাইলে পুস্তক সমালোচনা এবং সাক্ষাৎকার রাখতে পারেন । বেশ গদগদ হয়ে
উঠলেন নিমচাঁদবাবু । দারুণ প্রস্তাব । আচ্ছা কার কার সাক্ষাৎকার নেওয়া যায় বলুন তো
! আমি কয়েকটা নাম বললাম । যেমন ধরুন বৃন্দাবন চন্দ্র চন্দ ,
রমণীরমন
পাল , লোচনসুন্দর
ঘোষ , শরৎচন্দ্র
ডোম.. কিছুক্ষণ ভেবে নিমচাঁদবাবু বললে , তাহলে
লোচনসুন্দর ঘোষের ইন্টারভ্যু নেওয়া যেতে পারে । -- কারণ ?
জিজ্ঞেস
করলাম আমি । নিমচাঁদবাবু বললেল , শুনুন
যাঁদের নাম বললেন তাঁদের নাম শুনেছি । তবে লোচনবাবু স্কুলটিচার । টাকা- পয়সা অনেক
আছে । ছাত্র পড়ায় । লেখালিখিটাও ভালোই করেন । ভেবেছি ওঁর থেকে ডোনেশান বাবদ টাকা
নেব আর ইন্ট্যারভ্যুটাও ছেপে দেব । মাছের তেলে মাছ ভাজা আর কী... বললাম ,
সে
কী ! অন্যরা কী দোষ করল ? নিমচাঁদবাবু
বললে , তাঁদের
তেমন টাকাও নেই । আর চাইলেও দেবে না । আমি আসলে লেখকদের টাকাতেই পত্রিকাটা করতে
চাই , বলে
দাঁত বার করলেন । আমি উঠে দাঁড়ালাম । হাত জোড়
করে দরজা দেখিয়ে বললাম , আপনি
এবার আসুন ।
আমার অন্য কাজ আছে ।
No comments:
Post a Comment